Sobujbangla.com | গোলাপগঞ্জে প্রবাসী পরিবারের স্বজনদের মামলা দিয়ে হয়রানি।
News Head

গোলাপগঞ্জে প্রবাসী পরিবারের স্বজনদের মামলা দিয়ে হয়রানি।

  |  ১১:০২, নভেম্বর ১০, ২০১৮

সিলেটের গোলাপগঞ্জের ফুলসাইন্দ গ্রামের প্রবাসী পরিবারকে বাড়ি ছাড়া করে তাদের সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য তার স্বজনদের মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করেছেন একই গ্রামের তোতা মিয়ার স্ত্রী জয়তুন বিবি। তিনি এও বলেন, প্রবাসী আব্দুল মতিন পরিবারকে বাড়িছাড়া করতে প্রভাবশালী একটি মহল স্থানীয় ফুলসাইন্দ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল গফুরকে দিয়ে তার স্বজনদের বিরুদ্ধে মামলা করাচ্ছেন।
শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। জয়তুন বিবি প্রবাসী আবদুল মতিনের স্বজন। হয়রানী করতে তার স্বামীকেও মাদ্রাসা সুপারের দায়ের করা মামলায় আসামী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের স্বজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল মতিন পরিবারের ভিটেবাড়ি জবরদখলের হীন উদ্দেশ্যে পর-পর মিথ্যে ও সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানীর করছে একটি মহল। তিনি বলেন, ‘স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে থাকায় প্রায় ২০ বছর ধরে আব্দুল মতিনের বাড়িঘর পাহারার দায়িত্বে ওই বাড়িতে বসবাস করছেন একই গ্রামের জিলাল উদ্দিনের পরিবার। এবং সহায়-সম্পত্তির আম-মোক্তার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন একই গ্রামের খলিল উদ্দিন। গ্রামে রয়েছে ফুলসাইন্দ দারুল ক্বেরাত দাখিল মাদ্রাসা নামে একটি মাদ্রাসা। এই দ্বীনি মাদ্রাসাকে পুঁিজ করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ও ভূমিদস্যু চক্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী মতিন, খানমদের পৈত্রিক ভিটেবাড়ি জবরদখল ও তাদের বাস্তুহারা করার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। স্বার্থান্বেষীরা মাদ্রাসায় তাদের অনুগত ব্যক্তিকে সুপারিন্টেন্ডেন্ট নিয়োগ ও তাকে দিয়ে মাদ্রাসার নামে ওই প্রবাসী পরিবারকে উচ্ছেদে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। নিরুপায় হয়ে আম-মোক্তার খলিল উদ্দিন জবরদল থেকে প্রবাসী পরিবারের পৈত্রিক ভিটেবাড়ি রক্ষার্থে তাদের পক্ষ হয়ে দেওয়ানী আদালতে স্বত্বমোকদ্দমা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি মহামান্য হাইকোর্টে চলমান আদেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মতিন তার পৈত্রিক বাড়িঘর নিয়ে শান্তিপূর্ন সহাবস্থানে থেকে ভূমির দখল ও মালিকানা নিস্কণ্ঠক করতে উচ্চ আদালতের রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন। দেওয়ানী আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় ভূমিদস্যুরা মাদ্রাসার নামে প্রবাসী পরিবারের পৈত্রিক বাড়িঘর দখলে নিতে পারছে না। তাই তারা বেছে নিয়েছে মিথ্যা ও সাজানো ফৌজদারী মামলা দিয়ে হয়রানীর পথ। বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা প্রবাসী পরিবার ও তাদের স্বজনদের অতিষ্ট করে তুলেছে। জেল-জুলুম দিয়ে তাদেরকে বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে ফুলসাইন্দ দাখিল মাদ্রাসার বারান্দার গ্রীলে চটের বস্তা পুড়িয়ে অগ্নি সংযোগের একটি ঘটনা সাজিয়ে তাদের অনুগত সুপারকে দিয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি প্রবাসী পরিবারের কেয়ারটেকার ও আম-মোক্তার সহ স্বজনদের বিরুদ্ধে সাজানো ঘটনায় দ্রুতবিচার আইনে একটি মামলা রেকর্ড করায়, যা সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার মামলা নং-০৯(৯)১৮। পাশাপাশি প্রবাসী পরিবারে আম-মোক্তার খলিল উদ্দিনকে গ্রেফতার করিয়ে জেলে প্রেরণ করায়, আম-মোক্তার খলিল উদ্দিন বর্তমানে ওই সাজানো মামলায় জেলে রয়েছেন। অন্যদের পুলিশী হয়রানীর মাধ্যমে বাড়িছাড়া করে চলেছে স্বার্থান্বেষী এ মহল।’
তিনি বলেন, মাদ্রাসা সুপার আব্দুল গফুর স্বার্থান্বেষীদের প্ররোচনায় মাদ্রাসার নাম ব্যবহারে সম্পূর্ন মিথ্যা ও সাজানো ঘটনায় এ মামলা দায়ের করে নিজের আখের গোছাতে শুরু করেছেন, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এ ছাড়াও মামলায় এমন কিছু মানুষকে সাক্ষী করা হয়েছে যারা সমাজে ভন্ড ও দুষ্টচক্র বলে পরিচিত। এ কারণে হয়রানীর শিকার হচ্ছে প্রবাসী পরিবারের স্বজনরা। আমরা এ সাজানো হামলা-মামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। পাশাপাশি তদন্ত সাপেক্ষে সত্য ঘটনা উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানাই ও মিথ্যা মামলা দায়েরের কারণে মাদ্রাসা সুপারের অবিলম্বে পদচ্যুতি এবং ফুলসাইন্দ দাখিল মাদ্রাসার জন্য একজন সৎ নিষ্ঠাবান ও চরিত্রবান সুপার নিয়োগে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সুদৃষ্টি ও আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রুশনা বেগম, রানু বেগম, রায়হান উদ্দিন, আজাদ মিয়া ও বদরুল হক।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ